175303409795954 175303409795954 Manas Modak: 2018 175303409795954

রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮

ইচ্ছে ডানা

Image result for ইচ্ছে ডানা কবিতা
আজ একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম। আমি দূরে কোথায় একটা যাবো ! ঠিক জায়গাটার নাম মনে পড়ছে না, জলপাইগুড়ি বা তার আশেপাশে কোথাও একটা হবে। বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন‍্য অপেক্ষা করছি, টিকিট কাটা হয়ে গেছে। কিযেন একটা ভাবতে ভাবতে একটু অন‍্যমনস্ক হয়ে পরেছি। হঠাৎ একটা বাস স্ট‍্যান্ড থেকে বেরিয়েই অতিদ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি সেটা দেখে বাসটার পিছনে 
 দৌড়াচ্ছি আর চিৎকার করে বলছি --"থামো থামো"। কনট্রাকটর আমার কথা শুনতেই পাচ্ছে না। 

আমার মতো আমার পিছনে আরেকজন ভদ্রলোক দৌড়াচ্ছেন আর আমাকে ডাকছেন, আমি থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম। দেখলাম উনি বলছেন ," দাদা আপনি যে বাসে যাবেন এটা সেই বাস নয়। এই বাসটা দোতলা, আর আপনার ,আমার বাসটা একতলা। " আমি ওনার কথা শুনে আশ্বস্ত হলাম। বুকে প্রাণ ফিরে পেলাম। 

তারপর ঘুম ভেঙে গেল। মনে পরে গেলো, ছোট বেলার এই রকম স্বপ্নের কথা। আমি উঁচু মাটির পাহাড়ের উপর থেকে লাফ দিয়েছি। আর ওড়ার চেষ্টা করছি। কিছুটা উড়তে পারছি ,আর পরে যাচ্ছি। আবার লাফ দিচ্ছি, আবার কিছুটা উড়তে পারছি। 


এই হলো আমার জীবন। একটা ইচ্ছে ডানা । ইচ্ছে পূরণ করতে করতে বারে বারে পরে যাই। আবার উঠে পড়ি ,নতুন উদ‍্যমে চলতে থাকি। আজ‌ও চলছে, আমার পথ চলা। জানি না কখন আমার লক্ষ‍্যে পৌঁছতে পারবো। কিংবা আদৌ পৌঁছতে পারবো কিনা?

বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৮

জীবনালয় স্মৃতি কথা

জীবনালয় স্মৃতি কথা
*****************
পর্ব- ১


আমাদের পাড়ায় হাতেগোনা কয়েকজন পুকুরে স্নান করেন, তাদের  
 মধ্যে আমি  একজন। পুকুরটা আমার বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে।
আম,জাম,জামরুল, কাঁঠাল, সুপারি গাছে ঘেরাপুকুর। 

সকালের সোনালী রোদ সুপারি গাছের মাথার উপর দিয়ে পুকুরের জলে পরে ঝিকমিক করছে।



অভ্যাসবশত প্রতিদিনের মতো ঘুম থেকে উঠে স্নান করতে গেলাম। এমনিতেই পুকুর সংলগ্ন বাগানটা ছায়া ঘেরা শান্তির নীড়। নিরবতাই ঐ বাগানের বিশেষত্ব।

 কিন্তু আজ দেখলাম সম্পূর্ণ আলাদা এক পরিবেশ। পাখীর কূজনে আমার অলসদেহ এক মুহূর্তে সজাগ করে দিলো। চারিদিকে কিচিমিচির শব্দ।

 বেশ উচ্চ স্বরে ফিঙে, শালিক, দোয়েল, বৌ-কথাক‌ও, ছাতারে, বসন্তবৌরি , নীলকণ্ঠ, মাছরাঙা,সুইচোরা,চাতক, চোখগ্যালো, কানকুয়া  পাখীর কি যেন একটা গভীর আলোচনায় ব্যাস্ত। 

অনেকক্ষণ ধরে ওদের ভাষাটা বোঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না। দূরের গ্রাম থেকে তখন শ্যামা সঙ্গীত ভেসে আসছে ... "সকলি তোমারি ইচ্ছা, ইচ্ছাময়ী তারা তুমি।"

সেটা ছিল একটা স্বর্গীয় পরিবেশ । ছেড়ে আসতে ইচ্ছা করছিলো না । কিন্তু কি করবো! অফিস আছে যে! চলে আসলাম সকলকে বিদায় দিয়ে....                                        

                                                                                                                                                                                                                                                                                                                     (চলবে)

সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮

বিজ্ঞাপন

Image may contain: 1 person, shoes
বিজ্ঞাপন ছাড়া সিনেমা/সিরিয়াল দেখেছেন কি কখনো?
না! বিজ্ঞাপন ছাড়া চলচ্চিত্র/সিরেয়াল একঘেয়েমিপূর্ণ। মোটেও চিত্তাকর্ষক হয় না।

ঠিক তেমনি , নেতার পাশে দাঁত বার করে সেল্ফি দেওয়া টাও বিজ্ঞাপনের‌ই অঙ্গ। এটা অন্য ভাবে দেখবেন না।
আসলে মানুষের জীবনটাই একটা বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন ছাড়া নিজেকে জ্ঞাপন বা প্রকাশ করা যায় না। আর নিজেকে প্রকাশ করতে কে চায় না বলুন?

একটা সময় গেছে বিজ্ঞাপন ছাড়াই সব কিছু হতো। একশ্রেণীর মানুষ ছিলো, যারা নিরবে মানুষের জন্য, সমাজের জন্য, রাজনীতির জন্য নিঃশব্দে, নিঃস্বার্থভাবে, ত্যাগের মাধ্যমে কাজ করে গেছেন, তাদেরকে আজ কে-ইবা মনে রেখেছেন। যখন মানুষের প্রয়োজন ছিলো ঐ ব্যাক্তিকে মনে রেখেছেন, যখন প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে সেই মানুষগুলোকে সবাই ভূলে গেছে। এটাই বাস্তব।

তাই বিজ্ঞাপনের বড়ো প্রয়োজন। তবে বিজ্ঞাপন, কাজের থেকে কম হ‌ওয়া ভালো, কিন্তু কোন মতেই মূল কাজ / বিষয়বস্তু থেকে বেশী না হয়ে যায় ,এটা মাথায় রাখতে হবে।

আচ্ছা হাত তুলে বলুনতো! এবারের দূর্গাপূজাতে ঠাকুর দেখতে গিয়ে কে কে সেল্ফি তোলেন নি? কিংবা এবার কালীপূজাতে ঘুরতে গিয়ে কে সেলফি দেবেন না? 
দূরবীন দিয়ে খুঁজে বার করতে হবে।

Image may contain: 1 person, phone and closeup
বর্তমান ডিজিটাল যুগে মানুষ, দামী ক্যামেরা,উন্নতমানের ক্যামেরা কিনছে সেল্ফি তোলার জন্য। সেল্ফি টাও একটা শিল্প। কে কতো সুন্দরভাবে নিজেদের শিল্পপ্রদর্শন করবে সেই নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা।

আমরাও এই বিজ্ঞাপনে অভ্যস্ত হয়ে পরেছি। সমাজ, রাজনীতি , অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ধর্মনীতি,ব্যাবসা- বাণিজ্য প্র‍ত্যেকটা ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন লক্ষ করা যায়।

স্যোসাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনের একটা বড়ো ক্ষেত্র। মেয়েরা নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে, চোখ-নাক-মুখ বেঁকিয়ে সেল্ফির মাধ্যমে। আর সেই ছবি দেখে প্রেম প্রেম ভাবে উদ্বুদ্ধ ছেলেরা হাজারটা লাইক দিলেই মেয়েদের সেই বিজ্ঞাপন দেওয়া স্বার্থক হয়। এক‌ইভাবে ছেলেরা‌ও সেল্ফি দিয়ে থাকে । আবার প্রেমিক- প্রেমিকরা সেলফি দিয়ে পোষ্ট করে সকলের সামনে তাদের প্রেমের গভীরতা প্রমাণ করার জন্য।

গোটা স্যোসাল মিডিয়াটাই একটা বিজ্ঞাপন। শুধু বিজ্ঞাপন বললে বাংলা ভাষাকে ছোট করা হবে, বলবো প্রমাণ পত্র। আমি খাচ্ছি, দাও একটা সেল্ফি, খাওয়ার প্রমাণ । আমি যাচ্ছি, দাও একটা সেল্ফি , যাওয়ার প্রমাণ। আমি ঘুমাচ্ছি ,দাও একটা সেল্ফি ,ঘুমানোর প্রমাণ। আসলে জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত আমরা ক্যামেরা বন্দি করতে ভালোবাসি । স্যোসাল মিডিয়া একটা স্টোরেজ। যেটা ভবিষ্যৎ এর জন্য স্মৃতিগুলোর প্রমাণ রাখে। এটা ব্যাঁকা চোখে দেখার কিছু নেই ।

Image may contain: 1 person, indoor

আর যারা যারা তাদের রাজনৈতিক প্রচারে নিজের নামটা লিখে দেন , ঠিক করেন, এই প্রতিযোগিতার যুগে একটা প্রমাণ রাখা ভালো। তা না হলে তার জেরক্স হয়ে অন্যের নামের স্ট্যাম্প পরে যাবে। যেমনটা নেপোয় মারে দই। নিজের নাম লেখাটা কোন নীতি, আদর্শের বিরোধী নয়, বরং আপনার পরিশ্রমের প্রমাণ।

একটা কথা বলছি কেউ অন্যভাবে নেবেন না। ব্রাক্ষ্মণরা বলে থাকেন, গৃহস্থদের ঘরে রান্না করার সময় বেল কাঠ পোড়াতে নেই। কিন্তু কিন্তু এটা কি জানেন? বেলকাঠের আগুনটা অনেকক্ষণ থাকে । অর্থাৎ খুব সুন্দরভাবে বেল কাঠ দিয়ে রান্না করা যায় । তাই ব্রাক্ষ্মণরা এই নিয়ম করেছেন , বেল কাঠ একমাত্র তারাই ব্যবহার করতে পারবেন , অন্য কেউ নয়। এটা ঠিক নয়।

সবাইতো নিজের পয়সায় নেট করে । আপনি আপনার ওয়ালে নিজের সেল্ফি দিতে পারেন, নিজের নাম দেওয়া পোষ্ট করেন ,তাতে অন্য জনের আপত্তি হওয়ার কারণ কেন হবে?

রাস্তায় কেউ অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে পড়ে থাকলে বা কেউ অসুস্থ হয়ে যন্ত্রণায় কাতরালে, তার ছবির সঙ্গে নিজের ছবি না দিয়ে, তাকে আগে বাঁচান। তার পাশে দাঁড়ান। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।সেলফি টেলফি পরে তুলবেন। আমাদের প্রত্যেকের এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যাতে সেলফি শিল্প কলঙ্কিত হয়। পরিশেষে বলবো, চলুক বিঞ্জাপন, উঠুক সেল্ফির ঝড় । তবে মানবিকতা, দায়বদ্ধতা, সহমর্মিতা বজায় চোখে ।

মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৮

জীবনের শিক্ষায় ছোটবেলা





Image result for অনুকূল ঠাকুর


ছোট বেলায় ঘটে যাওয়া ঘটনা জীবনে অনেক বড়ো শিক্ষা দেয়। তেমন‌ই একটি ঘটনা আজ বলবো। আমি তখন স্কুলে পড়ি। কালিপূজোর দিন সন্ধ‍্যে বেলা কি রকম মনে হলো, বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনো কিছুর সন্ধানে রাস্তায় ঘুরতে গেলাম। ছোট থেকেই আমি আপনভোলা স্বভাবের । রাস্তায় গিয়ে দেখলাম একটি শীর্ণকায় বিড়ালছানা। ভালো করে হাঁটার ক্ষমতা নেই, যখন ওর কাছে গেলাম , ও ক্ষীণ গলায় ডেকেছিল "মিয়াও"। আমার খুব ভালো লাগলো। বাড়িতে ওকে আনলাম। গরিব ঘরে মা যা রান্না করতো ওকে নিজে হাতে খাওয়াতাম। ধীরে ধীরে ও বড়ো হতে লাগলো। আদরকরে ওর নাম রাখলাম "মুনু"। 
Related image
আমি বিছানায় শুয়ে থাকলে ও যেখানেই থাকুক না কেন আমার পাশে এসে শুতো। সময় পেলেই ওকে খুব চটকাতাম।  প্রসঙ্গত বলে রাখি আমি খুব ছোটবেলায় অনুকূল ঠাকুরের দীক্ষা নিয়েছিলাম। শুধু দীক্ষা নেওয়া নয়, প্রার্থনা-উপবাসসহ সমস্ত নিয়মাবলী মেনে চলতাম। একদিন সকালে প্রার্থনা করতে বসেছি। হঠাৎ কোথা থেকে #মিনি এসে আমার কোলে বসলো।  ভক্তিযোগে  ইষ্ট দেবতার উপর মনোনিবেশের বদলে মিনির উপর সমস্ত মনটা চলে গেলো। চোখ বুজিয়ে ওর উপস্থিতি, আমার মনে অফুরন্ত আনন্দ ও সুখের সঞ্চার করছিলো। ঠিক এই সময় পায়ের মধ‍্যে একটা শুড়শুড়ি উপলব্ধি করলাম। মনে হলো মুনু আমার পায়ের আঙুল  নিয়ে খেলা করছে। এরকিছুক্ষণ পর মনে হলো, মুনু আমার বুড়ো আঙুলটা  হালকা কামড় দিচ্ছে, তার কিছুক্ষণ পর মনে হলো বুড়োআঙুলটা কে যেন খুব শক্তকরে কামড়ে ধরেছে। এবার আমার সম্বিত ফিরলো। চোখ খুলে দেখি একটা বিশাল ডারা সাপ। আমার পায়ের সাদা বুড়ো আঙুলটা ব‍্যাঙ ভেবে গেলার চেষ্টা করছে। সঙ্গে সঙ্গে আমি লাফিয়ে উঠলাম। সাপটাও পালাল। 
Image result for ডোরা সাপ

কিন্তু আশে পাশে কোথাও মুনুর অস্তিত্ব চোখে পড়লো না। তখন বুজলাম, আমার বিপদ দেখে ভয় পেয়ে ও কখন পালিয়েছে।

একবিংশ শতকে এসে আজ বুজলাম, ওটা ছিলো আমার জীবনে একটা শিক্ষা, একটা ম‍্যাসেজ। আপনি কাউকে ভালোবেসে যত‌ই আপন ভাবুন না কেন, বিপদের দিনে কিন্তু পাশে পাবেন না। ব‍্যক্তিস্বার্থের কাছে সমষ্টিস্বার্থ বড়ো অসহায়। ভালোবাসা ভালো, কিন্তু মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসা দুঃখের‌ই পথ প্রসস্ত করে... 

তবুও এখনো আমি আগের মতন‌ই আছি। নিজের খেয়ালে চলি, মনে মনে কথা বলি...

বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮

।। শান্তির জায়গা শান্তিপুর।।

।। শান্তির জায়গা শান্তিপুর।।
Image may contain: sky, tree, plant, outdoor and nature
"সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"- কথাটা নদিয়ার শান্তিপুরে না গেলে বোধ হয় বুঝতে পারতাম না।
শিয়ালদহ স্টেশন থেকে শান্তিপুর লোকালে উঠেছি । সঙ্গে আছে প্রতীম । দীর্ঘ পথ। ট্রেনে মোট ২.৩০ ঘন্টা সময় লাগে। প্রচন্ড ভিড় হয় এই ট্রেনে। একটা অদ্ভুত কিন্তু খুব সুন্দর নিয়ম আছে শান্তিপুরগামী লোকাল ট্রেন গুলোতে ----আপনি বসার সিট পেলেও , অর্ধেক পথ কিন্তু আপনাকে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের বসার সুযোগ করে দিতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।
Image may contain: train, plant and outdoor
যাইহোক Proteem Basak এর বাড়িতে আস্তানা নিলাম । প্রতীমের মা'র অতিথি আপ্যায়নের কোনো তুলনা হয় না, কাকিমার লক্ষ্মীশ্রী চেহারা , ও মিষ্টি ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করে তুলেছিলো। গোটা পরিবার‌ই বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত। খুব ভালো লাগলো ওর ছোট ভাইকে--- নাম #রুপম । একটু লাজুক স্বভাবের । ক্লাস সেভেনে পড়ে।
জিজ্ঞাসা করলাম- "কোন স্কুল?"
ও বললো "মুসলিম স্কুল"। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ওখানে কি শুধু মুসলিমরা পড়ে?"।
ও আমাকে বললো- "ওখানে হিন্দু-মুসলিম সবাই পড়ে।"
প্রতীম আমাকে বললো--- এখানে হিন্দু স্কুল‌ও আছে। সেখানে হিন্দু- মুসলিম সবাই পড়াশোনা করে। আরো অনেক কিছু ভালো লেগেছিলো, সে কথা পরে একদিন বলবো। "বিভেদের মাঝে দেখো , মিলন‌ও মহান"- এটাই শান্তিপুর।।
Image may contain: people sitting
নিজের চোখে দেখলাম শান্তিপুরবাসী খুব পরিশ্রমী ও কর্মঠ হয়, ঘরে ঘরে পেশা বলতে তাঁত শিল্প । সকালে ঘুম ভাঙলো #খট_খট আওয়াজ শুনে। প্রতীমকে জিঞ্জাসা করলাম--"ওটা কিসের শব্দ শোনা যাচ্ছে"। ও বললো-- "তাঁতের মেশিনের শব্দ। লোডসেডিং তাই কাঠের মেশিনে শাড়ি বুনছেন আনেকে ।আমাদের এখানে বেশীরভাগ লোকেই ইলেকট্রিক মেশিনে তাঁত বোনে"।
দারুণ তো! জেদ ধরলাম, কিভাবে শাড়ি তৈরি হয় দেখবো।
Image may contain: 1 person, standing, ocean, sky, outdoor and water
পরেরদিন দুপুরে বেরিয়ে পড়লাম ঘুরতে। প্রথমে #গঙ্গা_দর্শন। প্রতীমের বাইকে করে ওর আদুরে আদুরে গলায় এলাকার বর্ণনা শুনতে শুনতে পৌঁছে গেলাম কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত দক্ষিণের খেয়া ঘাটে।
কবির ভাষায় " শান্তিপুরের দক্ষিণ হ‌ইতে আরম্ভ করিয়া গঙ্গার যেরুপ শোভা এমন আর কোথায় আছে!"
সত্যিই না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। দীর্ঘ গঙ্গা। ঘাটেতে মায়েরা , লোকেরা, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা স্নান করছেন। ঘাটের সামনে বিশ্রামাগার। আর ঘাটের একপাশে অনেকগুলি নৌকা বাঁধা আছে। গঙ্গার মাঝখানের চড়া পড়ে যাওয়া অংশে কাশফুলের সারি। গঙ্গার পাড় গুলিতে প্রশস্ত বনরাশি আর সবুজ বনের মাঝে সাদা থোকো থোকো কাশ ফুল। এক অপরুপ শোভা।
Image may contain: 1 person, standing, plant, tree, grass, outdoor and nature
এরপর গেলাম শান্তিপুরে মহাশ্মশান দর্শন করতে। কথিত আছে গঙ্গার দক্ষিণ প্রান্তের শ্বশান স্বর্গের দ্বার। পৌরাণিক কাল থেকেই এটা পূণ্যস্থান বলে মনে করা হয়। কাঠের চুল্লির পাশাপাশি দেখলাম আধুনিক ইলেকট্রিক চুল্লিও আছে। মনটা কেমন হু হু করে উঠলো। এখানে আর বেশিক্ষণ থাকলাম না।
Image may contain: 1 person, sky and outdoor
এরপর গেলাম মহাপুরুষ চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষাগুরু অদ্বৈত আচার্যর সাধনপীঠ নিকটবর্তী #বাবলা_গ্রামে।চৈতন্যদেব, নিত্যানন্দ মহাপ্রভু ও অদ্বৈতাচার্যের মিলন ঘটেছিল এই বাবলায়। সন্ন্যাস গ্রহণের পর এখানেই চৈতন্যের সঙ্গে দেখা হয়েছিল শচীমায়ের।
Image may contain: outdoor
মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতেই অনুভব করলাম একটা অকল্পনীয় শান্তি ও নিরবতা। ভিতরে অনেকগুলি মন্দির , ছায়া ঘেরা গোটা এলাকা‌। গাছের তলায় এখানে সেখানে়, মন্দিরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছেন ভক্তরা। খুব সুন্দর একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম। একটা গাছেতে আটকানো ছোট্ট সাইনবোর্ডে লেখা আছে ....."পাদুকা যুগলকে এই স্থানে বিশ্রাম দিন।"😀
Image may contain: one or more people, tree and outdoor
এরপর ইষ্ট দেবতাকে প্রণাম করে ওখান থেকে ফিরে আসার পথে রাস্তার ধারে ধারে দেখলাম তাঁতিরা; বাঁশের ফ্রেমে নতুন বোনা কাপড়ে মাড় দিয়ে শুকোতে দিয়েছেন। ছবি তোলার ইচ্ছা থাকলেও তুলতে পারলাম না। কারণ অলরেডি অনেক দেরি হয়ে গেছে। যাইহোক ওর বাড়ি ফিরে দ্বিপ্রহরের আহার সেরে একটু বিশ্রাম নিলাম।
এরপর সন্ধ্যাবেলা আবার এলাকা ঘুরতে বেড়িয়ে পড়লাম। প্রথমে গেলাম Saowni Das এর বাড়ি , ওর বাড়িতে সবার সাথে দারুণ ভাবে গল্পের আসর বসে গেলো। সবাই খুব ভালো । খুব বন্ধুত্বপূর্ণ । ওদের গোটা বাড়ি ঘুরে দেখলাম। সন্ধ্যা বেলা লুচি আর মাংস কব্জি ডুবিয়ে খেলাম।
তারপর ঘুরতে ঘুরতে প্রতীম আমাকে দেখালো কোথায় মিঠুন চক্রবর্তীর বাড়ি! আর দেখলাম কুমোর পাড়ার দূর্গা প্রতিমা গড়ার দৃশ্য। মাটির সোঁদা গন্ধ, আর বাতাসে একটা একটা #মা #মা ভাব । খুব উপভোগ করলাম মুহূর্তটা।
Image may contain: one or more people
আবার চলে আসলাম প্রতীমের বাড়ি । রাতের খাবার খেয়ে নিয়ে অফিসের কিছু পেন্ডিং কাজ সারতে সারতে ৩টে বেজে গেলো। শুয়ে পড়লাম ।
ঘুম ভাঙলো বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠের গান শুনে -------------- "যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতা নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমঃ নমঃ ||"
Image may contain: sky, tree, twilight, outdoor and nature
দেবীপক্ষে ভোরের শান্তিপুর।। চোখ মুখ ধুয়ে মোবাইল নিয়ে শান্তিপুরের মনমুগ্ধকর কিছু ছবি তুললাম। এবার ঘরে ফেরার পালা । মা আসছেন। #বিদায়_শান্তিপুর । বন্ধুরা আপনারাও পারলে একবার ঘুরে আসুন শান্তিপুর। আমার খুব ভালো লেগেছিলো, আশা করি আপনাদের‌ও খুব ভালো লাগবে।

মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ডিজিটাল কনক্লেভ



আমার কোনোদিন দিদিকে সামনে থেকে দেখার সৌভাগ্য হয় নি কিন্তু অভিষেক দাকে সামনা সামনি অনেকবার দেখেছি । তাঁর কথা শুনেছি। Abhishek Banerjee দাদার রুচিশীল , মার্জিত , যুক্তিসঙ্গত, মমনশীল চিন্তাধারাপ্রসূত বাক‍্যবিন‍্যাশ ও বক্তৃতা শুনে বারে বারে অভিভূত ও মোহিত হয়ে গিয়েছি । অত‍্যন্ত জোরের সাথে বলছি এমন নেতৃত্ব গোটা বাংলা তথা ভারত পেয়েছে এটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয়।
আমার কাছে এক এবং অদ্বিতীয়ম দেবী বলতে Mamata Banerjee ছিলেন আছেন এবং থাকবেন। কিন্তু সেই দেবীর একজন দক্ষ ও যজ্ঞ পূজারী হিসাবে অভিষেক দার আসন চিরকাল অভিষিক্ত থাকবে।
এবার আসি আসল কথায় ,এটা বলা বাহুল‍্য ,স‍্যোসাল মিডিয়ায় বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের লড়াইএ তৃণমূল কংগ্রেস অনেকটাই এগিয়ে আছে ,এবং থাকবে। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারকগণ টাকায় নয় ভালোবাসায় বিশ্বাসী । আর তৃণমূল কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই ভালোবাসার দল। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব‍্যাক্তিস্বার্থ /গ্রুপের স্বার্থ দেখতে গিয়ে পারস্পরিক কটুক্তি/ব‍্যঙ্গাত্বক/সমালোচনামূলক পোষ্ট করে আমাদের দূর্বলতা বিজেপির আইটি সেলের সামনে তুলে ধরছি।এটা কি ঠিক?
উত্তরটা গতকাল #DigitalConclave এ #অভিষেক দা দিয়ে দিলেন ।
তিনি বলেছিলেন,- "গ্রুপ টু গ্রুপ কমপিটিশান থাকা ভালো, সেটা তথ‍্য পরিসংখ‍্যানকে সামনে রেখে।কে বড়ো ? কে ছোট এটা প্রমাণ করতে গিয়ে দলকে দয়া করে খাস্তা করবেন না"
অত‌এব বন্ধকরুন আপনদের গ্রুপগুলির ওইসব বড়োত্বের হামবড়াই। বন্ধ করুন বলা,--- আমাদের গ্রুপ এগিয়ে , তোমাদের গ্রুপ এগিয়ে ।
মনে রাখবেন দলটা আছে বলেই গ্রুপ গুলো আছে। দলনা থাকলে গ্রুপও থাকবে না। #HealthyCompetion হোক ,তা বলে কাউকে ছোট করে নয়, দলের ক্ষতি করে নয়।
আপনি যে গ্রুপের‌ই সদস‍্য হোন না কেন , #বড়ো বলে যদি কিছু বলতে চান তো ,বলুন তৃণমূল কংগ্রেস এতো বড়ো, #এগিয়ে যদি বলতে চান বলুন #এগিয়ে_বাংলা। আর গর্ব ও অহংকার যদি কিছু করতে চান , #মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে করুন। গ্রুপের ঊর্ধ্বে /ব‍্যাক্তি অহং পরিত‍্যাগ করে এটা ভাবুন ,আপনিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন পূজারী । ফেসবুক/টুইটারে আপনাদের লেখা দিদি নিজে দেখছেন /পড়ছেন ।
অত‌এব আপনাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে কি বলতে চাইলাম নিশ্চয় বুঝেছেন, আর যদি না বুঝে থাকেন , যিনি বুঝতে পেরেছেন , তাঁর কাছ থেকে বুঝে নিন।।।