175303409795954 175303409795954 Manas Modak: নভেম্বর 2018 175303409795954

রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮

ইচ্ছে ডানা

Image result for ইচ্ছে ডানা কবিতা
আজ একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম। আমি দূরে কোথায় একটা যাবো ! ঠিক জায়গাটার নাম মনে পড়ছে না, জলপাইগুড়ি বা তার আশেপাশে কোথাও একটা হবে। বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন‍্য অপেক্ষা করছি, টিকিট কাটা হয়ে গেছে। কিযেন একটা ভাবতে ভাবতে একটু অন‍্যমনস্ক হয়ে পরেছি। হঠাৎ একটা বাস স্ট‍্যান্ড থেকে বেরিয়েই অতিদ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি সেটা দেখে বাসটার পিছনে 
 দৌড়াচ্ছি আর চিৎকার করে বলছি --"থামো থামো"। কনট্রাকটর আমার কথা শুনতেই পাচ্ছে না। 

আমার মতো আমার পিছনে আরেকজন ভদ্রলোক দৌড়াচ্ছেন আর আমাকে ডাকছেন, আমি থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম। দেখলাম উনি বলছেন ," দাদা আপনি যে বাসে যাবেন এটা সেই বাস নয়। এই বাসটা দোতলা, আর আপনার ,আমার বাসটা একতলা। " আমি ওনার কথা শুনে আশ্বস্ত হলাম। বুকে প্রাণ ফিরে পেলাম। 

তারপর ঘুম ভেঙে গেল। মনে পরে গেলো, ছোট বেলার এই রকম স্বপ্নের কথা। আমি উঁচু মাটির পাহাড়ের উপর থেকে লাফ দিয়েছি। আর ওড়ার চেষ্টা করছি। কিছুটা উড়তে পারছি ,আর পরে যাচ্ছি। আবার লাফ দিচ্ছি, আবার কিছুটা উড়তে পারছি। 


এই হলো আমার জীবন। একটা ইচ্ছে ডানা । ইচ্ছে পূরণ করতে করতে বারে বারে পরে যাই। আবার উঠে পড়ি ,নতুন উদ‍্যমে চলতে থাকি। আজ‌ও চলছে, আমার পথ চলা। জানি না কখন আমার লক্ষ‍্যে পৌঁছতে পারবো। কিংবা আদৌ পৌঁছতে পারবো কিনা?

বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৮

জীবনালয় স্মৃতি কথা

জীবনালয় স্মৃতি কথা
*****************
পর্ব- ১


আমাদের পাড়ায় হাতেগোনা কয়েকজন পুকুরে স্নান করেন, তাদের  
 মধ্যে আমি  একজন। পুকুরটা আমার বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে।
আম,জাম,জামরুল, কাঁঠাল, সুপারি গাছে ঘেরাপুকুর। 

সকালের সোনালী রোদ সুপারি গাছের মাথার উপর দিয়ে পুকুরের জলে পরে ঝিকমিক করছে।



অভ্যাসবশত প্রতিদিনের মতো ঘুম থেকে উঠে স্নান করতে গেলাম। এমনিতেই পুকুর সংলগ্ন বাগানটা ছায়া ঘেরা শান্তির নীড়। নিরবতাই ঐ বাগানের বিশেষত্ব।

 কিন্তু আজ দেখলাম সম্পূর্ণ আলাদা এক পরিবেশ। পাখীর কূজনে আমার অলসদেহ এক মুহূর্তে সজাগ করে দিলো। চারিদিকে কিচিমিচির শব্দ।

 বেশ উচ্চ স্বরে ফিঙে, শালিক, দোয়েল, বৌ-কথাক‌ও, ছাতারে, বসন্তবৌরি , নীলকণ্ঠ, মাছরাঙা,সুইচোরা,চাতক, চোখগ্যালো, কানকুয়া  পাখীর কি যেন একটা গভীর আলোচনায় ব্যাস্ত। 

অনেকক্ষণ ধরে ওদের ভাষাটা বোঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না। দূরের গ্রাম থেকে তখন শ্যামা সঙ্গীত ভেসে আসছে ... "সকলি তোমারি ইচ্ছা, ইচ্ছাময়ী তারা তুমি।"

সেটা ছিল একটা স্বর্গীয় পরিবেশ । ছেড়ে আসতে ইচ্ছা করছিলো না । কিন্তু কি করবো! অফিস আছে যে! চলে আসলাম সকলকে বিদায় দিয়ে....                                        

                                                                                                                                                                                                                                                                                                                     (চলবে)

সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮

বিজ্ঞাপন

Image may contain: 1 person, shoes
বিজ্ঞাপন ছাড়া সিনেমা/সিরিয়াল দেখেছেন কি কখনো?
না! বিজ্ঞাপন ছাড়া চলচ্চিত্র/সিরেয়াল একঘেয়েমিপূর্ণ। মোটেও চিত্তাকর্ষক হয় না।

ঠিক তেমনি , নেতার পাশে দাঁত বার করে সেল্ফি দেওয়া টাও বিজ্ঞাপনের‌ই অঙ্গ। এটা অন্য ভাবে দেখবেন না।
আসলে মানুষের জীবনটাই একটা বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন ছাড়া নিজেকে জ্ঞাপন বা প্রকাশ করা যায় না। আর নিজেকে প্রকাশ করতে কে চায় না বলুন?

একটা সময় গেছে বিজ্ঞাপন ছাড়াই সব কিছু হতো। একশ্রেণীর মানুষ ছিলো, যারা নিরবে মানুষের জন্য, সমাজের জন্য, রাজনীতির জন্য নিঃশব্দে, নিঃস্বার্থভাবে, ত্যাগের মাধ্যমে কাজ করে গেছেন, তাদেরকে আজ কে-ইবা মনে রেখেছেন। যখন মানুষের প্রয়োজন ছিলো ঐ ব্যাক্তিকে মনে রেখেছেন, যখন প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে সেই মানুষগুলোকে সবাই ভূলে গেছে। এটাই বাস্তব।

তাই বিজ্ঞাপনের বড়ো প্রয়োজন। তবে বিজ্ঞাপন, কাজের থেকে কম হ‌ওয়া ভালো, কিন্তু কোন মতেই মূল কাজ / বিষয়বস্তু থেকে বেশী না হয়ে যায় ,এটা মাথায় রাখতে হবে।

আচ্ছা হাত তুলে বলুনতো! এবারের দূর্গাপূজাতে ঠাকুর দেখতে গিয়ে কে কে সেল্ফি তোলেন নি? কিংবা এবার কালীপূজাতে ঘুরতে গিয়ে কে সেলফি দেবেন না? 
দূরবীন দিয়ে খুঁজে বার করতে হবে।

Image may contain: 1 person, phone and closeup
বর্তমান ডিজিটাল যুগে মানুষ, দামী ক্যামেরা,উন্নতমানের ক্যামেরা কিনছে সেল্ফি তোলার জন্য। সেল্ফি টাও একটা শিল্প। কে কতো সুন্দরভাবে নিজেদের শিল্পপ্রদর্শন করবে সেই নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা।

আমরাও এই বিজ্ঞাপনে অভ্যস্ত হয়ে পরেছি। সমাজ, রাজনীতি , অর্থনীতি, সংস্কৃতি, ধর্মনীতি,ব্যাবসা- বাণিজ্য প্র‍ত্যেকটা ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন লক্ষ করা যায়।

স্যোসাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনের একটা বড়ো ক্ষেত্র। মেয়েরা নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে, চোখ-নাক-মুখ বেঁকিয়ে সেল্ফির মাধ্যমে। আর সেই ছবি দেখে প্রেম প্রেম ভাবে উদ্বুদ্ধ ছেলেরা হাজারটা লাইক দিলেই মেয়েদের সেই বিজ্ঞাপন দেওয়া স্বার্থক হয়। এক‌ইভাবে ছেলেরা‌ও সেল্ফি দিয়ে থাকে । আবার প্রেমিক- প্রেমিকরা সেলফি দিয়ে পোষ্ট করে সকলের সামনে তাদের প্রেমের গভীরতা প্রমাণ করার জন্য।

গোটা স্যোসাল মিডিয়াটাই একটা বিজ্ঞাপন। শুধু বিজ্ঞাপন বললে বাংলা ভাষাকে ছোট করা হবে, বলবো প্রমাণ পত্র। আমি খাচ্ছি, দাও একটা সেল্ফি, খাওয়ার প্রমাণ । আমি যাচ্ছি, দাও একটা সেল্ফি , যাওয়ার প্রমাণ। আমি ঘুমাচ্ছি ,দাও একটা সেল্ফি ,ঘুমানোর প্রমাণ। আসলে জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত আমরা ক্যামেরা বন্দি করতে ভালোবাসি । স্যোসাল মিডিয়া একটা স্টোরেজ। যেটা ভবিষ্যৎ এর জন্য স্মৃতিগুলোর প্রমাণ রাখে। এটা ব্যাঁকা চোখে দেখার কিছু নেই ।

Image may contain: 1 person, indoor

আর যারা যারা তাদের রাজনৈতিক প্রচারে নিজের নামটা লিখে দেন , ঠিক করেন, এই প্রতিযোগিতার যুগে একটা প্রমাণ রাখা ভালো। তা না হলে তার জেরক্স হয়ে অন্যের নামের স্ট্যাম্প পরে যাবে। যেমনটা নেপোয় মারে দই। নিজের নাম লেখাটা কোন নীতি, আদর্শের বিরোধী নয়, বরং আপনার পরিশ্রমের প্রমাণ।

একটা কথা বলছি কেউ অন্যভাবে নেবেন না। ব্রাক্ষ্মণরা বলে থাকেন, গৃহস্থদের ঘরে রান্না করার সময় বেল কাঠ পোড়াতে নেই। কিন্তু কিন্তু এটা কি জানেন? বেলকাঠের আগুনটা অনেকক্ষণ থাকে । অর্থাৎ খুব সুন্দরভাবে বেল কাঠ দিয়ে রান্না করা যায় । তাই ব্রাক্ষ্মণরা এই নিয়ম করেছেন , বেল কাঠ একমাত্র তারাই ব্যবহার করতে পারবেন , অন্য কেউ নয়। এটা ঠিক নয়।

সবাইতো নিজের পয়সায় নেট করে । আপনি আপনার ওয়ালে নিজের সেল্ফি দিতে পারেন, নিজের নাম দেওয়া পোষ্ট করেন ,তাতে অন্য জনের আপত্তি হওয়ার কারণ কেন হবে?

রাস্তায় কেউ অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে পড়ে থাকলে বা কেউ অসুস্থ হয়ে যন্ত্রণায় কাতরালে, তার ছবির সঙ্গে নিজের ছবি না দিয়ে, তাকে আগে বাঁচান। তার পাশে দাঁড়ান। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।সেলফি টেলফি পরে তুলবেন। আমাদের প্রত্যেকের এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যাতে সেলফি শিল্প কলঙ্কিত হয়। পরিশেষে বলবো, চলুক বিঞ্জাপন, উঠুক সেল্ফির ঝড় । তবে মানবিকতা, দায়বদ্ধতা, সহমর্মিতা বজায় চোখে ।